মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৪:২২ অপরাহ্ন
মুকসুদপুর ( গোপালগঞ্জ ) প্রতিনিধি:
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে দুই সন্তানের জননী পিঞ্জিরা বেগম (৩০) নামে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার মূল রহস্য উৎঘাটন ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভাই হাইয়ুম বেগ ও তার পরিবারের সদস্যরা । শনিবার (১৩ জুলাই) সকালে “মুকসুদপুর সংবাদ” কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মুকসুদপুরে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান গত মাসের ১৫ জুন দিবাগত রাতে মুকসুদপুর উপজেলাধীন কাশালিয়া গ্রামে আমার বোন পিঞ্জিরা বেগম (৩০) কে শ্বশুর বাড়ির লোকজন হত্যা করে একটি ঘরের আড়ার সাথে ঝুলাইয়া রাখে। ঘটনার দিন আনুমানিক রাত ১১টার সময়, আমার ভাগ্নি চাঁদনী (১০) আমাদেরকে মোবাইল ফোনে জানায় যে তার আম্মু (পিঞ্জিরা) কে বা কাহারা যেন মেরে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রাখছে। ঘটনা শোনার পর আমরা দ্রæত ঘটনাস্থলে যাই। কাশালিয়া পৌছানোর পর আমরা দেখতে পাই মুকসুদপুর থানার এস আই শফিকুল ও দুইজন পুলিশ সদস্য সেখানে উপস্থিত আছেন এবং তাদের উপস্থিতিতে আমরা দেখতে পাই বোন পিাঞ্জরার লাশ আড়ার সংগে ঝুলছে, লাশের পা মাটির সাথে মিশে ভাজ হয়ে আছে।
পুলিশ লাশ নামানোর সময় শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন এবং শরিরের বিভিন্ন স্থানে মাটি লাগানো দেখা যায়, মুখে থুতনির কাছে ও ঠোটের নিচে আঘাতের চিহ্নসহ রক্ত দেখা যায়। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে এবং লাশের অবস্থা দেখে বুঝা যায় এটা আতœহত্যা নয়, পরিকল্পিত হত্যা। পরে পুলিশ লাশ নামানোর পর ময়নাতদন্তের জন গোপালগঞ্জ মর্গে পাঠায়, ময়নাতদন্ত শেষে লাশ দাফন করে আমরা মুকসুদপুর থানায় মামলা করতে গেলে দায়িত্বরত অফিসার হত্যা মামলা নিতে অপরাগতা জানান এবং অপমৃত্য মামলা হিসেবে মামলা রুজু করে। পরে গোপালগঞ্জ কোর্টে গিয়ে একটি আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলা দায়ের করি। আদালতের নির্দেশে মামলাটি পুলিশ বুরো ইনভিস্টিগেশনে (পিবিআই) তদন্তনাধীন আছে।
আমার বোন পিঞ্জিরা বেগমের হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী তার স্বামী কাশালিয়া গ্রামের মৃত খালেক শেখের ছেলে কিরন শেখ। কিরনের সাথে ১২বছর পূর্বে কাবিন মূলে বিবাহ হয়। বিবাহের পর থেকে কিরন ও তার পরিবার বিভিন্ন সময় আমার বোনকে নির্যাতন করত এবং যৌতুকের জন্য চাপ প্রয়োগ ও মারধর করত। একাধিকবার এ বিষয়ে পারিবারিক ভাবে সালিস মীমাংসা করা হয়।
আমরা বোনের সুখের কথা ভেবে ৭বছর আগে কিরনকে আমাদের নিজ খরচে মালয়েশিয়া পাঠাই। তারপরও কিরনের পরিবারের নির্যাতন থেমে থাকেনি, বিভিন্ন সময় যৌতুকের জন্য তারা চাপ দিতে থাকে। ঘটনার কিছু দিন আগেও কিরনের মা ভাই ভাবি মিলে আমার বোনকে মারধর ও গালিগালাজ করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আমরা আমাদের বোনের দুইটি শিশু সন্তানের কথা চিন্তা করে বোনকে বুঝিয়ে আবারও কিরনের বাড়িতে পাঠাই।
আমার বোনের মৃত্যুর ঘটনার পরও কিরন দেশে আসে নাই। কিন্তু সে সুকৌশলে মালেশিয়া অবস্থানরত আমার অপর দুই ভাইয়ের বাসা থেকে টাকা পয়সা নিয়ে গত সপ্তাহে পালিয়ে বাড়িতে চলে আসে। বাড়িতে এসে কিরন নিজের সন্তানদের কোন খোজ খবর না নিয়ে আমাদেরকে মামলা উঠানোর জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকে এবং আমাদের নামে ২টি ভিত্তিহীন ও হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করে।
সংবাদ সম্মেলনে পিঞ্জিরার ভাই কাইয়ুম বেগ, পঞ্চম শ্রেণিতে পড়–য়া সন্তান চাঁদনি (১০), শিশু আবু বক্কার (৪), বড়বোন সালেহা বেগম বক্তব্য রাখেন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। পিঞ্জিরার শিশু সন্তান চাঁদনি প্রধানমন্ত্রী ও প্রশাসনের কাছে তার মায়ের হত্যার মূল রহস্য উৎঘাটন করে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্ত মূলক শা¯িÍ দাবি করে।